Hoop NewsHoop Trending

ক্রমশ বাড়ছে পৃথিবীর জলস্তর, চরম সঙ্কটের মুখে বিশ্ববাসী, চিন্তার ভাঁজ বিজ্ঞানীদের কপালে

‘মহাপ্লাবন’ যাকে ঐশ্বরিক শাস্তী বলে বিবেচনা করা হয়। প্রাচীনকালে প্রায় সব প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলিতে Great Flod বা মহাপ্লাবন এর উল্লেখ আছে। মহাপ্লাবন বলতে আমরা কি বুঝি? সমগ্র পৃথিবীজুড়ে জলোচ্ছ্বাস, জলস্ফীতি। হলিউডে “2012” নামে একটি সিনেমা নির্মাণ হয়েছিল, যেখানে দেখানো হয়েছে ২০২০ সালে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে – মহাপ্লাবনে। এর মানে হল এই পৃথিবী মহাপ্লাবনে সৃষ্টি, মহাপ্লাবনেই ধ্বংস! আপনি যদি মেসোপটেমীয় বা বাইবেলের মহাপ্লাবন বা হিন্দুধর্মে মহাপ্লাবন অথবা কোরান শরিফে মহাপ্লাবন অথবা সুমেরিয়ান মহাপ্লাবন সম্পর্কে একটু পড়েন তবে জানতে পারবেন এক বিরাট জলরাশি কিভাবে একটা সভ্যতাকে ডুবিয়ে দিয়ে নতুনের সৃষ্টি করতে পারে।

এখন আমরা যেই স্টেজে দাড়িয়ে আছি তাতে করে কি মহাপ্লাবন হওয়ার কোন সম্ভবনা রয়েছে? এর উত্তর সকলের কাছে এটাই হওয়া বাঞ্ছনীয় ‘হতেই পারে’। বিজ্ঞানীরা কী বলছেন এই ব্যপারে? বর্তমানে বিশ্ব উষ্ণায়ণ বা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জেরে জেরবার গোটা পৃথিবী। প্রতিদিনের গবেষণায় উঠে আসছে নিত্য নতুন তথ্য। রিপোর্টের পরিভাষা অনুযায়ী, পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার ফলে বেশ কিছু প্রাণীরা চিরতরে লোপ পেতে পারে, অন্যদিকে বরফ গলে গিয়ে বাড়তে পারে সমুদ্রের জলস্তর, দেখা দিতে পারে মহাপ্লাবন, এমনকি পুরোপুরি ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যেতে পারে পৃথিবী।

ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর কসমোলজি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোপার্টিকল ফিজিক্সের গবেষক জ্যোতির্বিদ য়ি-কুয়ান চিয়াং তাঁর সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দাবি করেছেন, এই সীমাহীন ব্রহ্মাণ্ডের উষ্ণতা ও পৃথিবীর উষ্ণতা একই ভাবে বেড়ে চলেছে, যদিও এঁদের মধ্যে পারস্পরিক কোন যোগসূত্র নেই। তিনি বিশ্ব উষ্ণায়ণের জন্য মানুষকেই দায়ী করেছেন, মহাজাগতিক কোনও ঘটনাকে নয়! আমরা যদি একটু বিশ্লেষণ করি এই ব্যপার বিজ্ঞানীদের পরিভাষা অনুযায়ী তবে জানতে পারবো যে তাপ সব সময় একমুখী। তা ধেয়ে যায় গরম বস্তু থেকে ঠান্ডা বস্তুর দিকে। যত ক্ষণ না দুটো বস্তুর উষ্ণতা সমান হয়। মিটে যায় উষ্ণতার তারতম্য। ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে এটাই নিয়ম। এ নিয়মের ব্যতিক্রম নেই কোথাও। কখনও দেখা যায় না এমন ঘটনা যে, তাপ ছুটছে ঠান্ডা বস্তু থেকে গরম বস্তুর দিকে। ঠান্ডা জিনিস হচ্ছে আরও ঠান্ডা, যা গরম ছিল তা হচ্ছে আরও গরম। চিয়াংয়ের একটি গবেষণা জানাচ্ছে যে বিগত ১০ বিলিয়ন অর্থাৎ ১০০ কোটি বছর সময়ের পরিমাপে ব্রহ্মাণ্ডের উষ্ণতা বেড়েছে আগের তুলনায় অন্তত ১০ গুণ বেশি। এবং তিনি এও দাবী করেছেন যে এই উষ্ণতা যত দিন যাবে, বাড়তেই থাকবে, তা কমার কোনও আশা নেই!তাহলে কি আমরা বিপদের সংকেত পাচ্ছি?

হ্যাঁ বিপদ চারিদিকে। এই বিশ্ব উষ্ণায়ণ বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং কে আমরা কাবু করতে পারি যদি সচেতন হই। গাছ লাগাতেই হবে আমাদের, পুকুর ডুবিয়ে কোন কন্সট্রাকশন আর নয়। আপনি হয়তো জানবেন যে বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ বরফ গলেছে আর্কটিক সাগরে। এর ফলে আশেপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাষ্পীভবন, বাতাসের আদ্রতা, মেঘের ঘনত্ব ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ লক্ষ্যণীয়ভাবে বেড়েছে। নাসার প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ১৯৮৮ সালে বলেছিলেন পৃথিবীর উষ্ণতা এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। গ্রীন হাউস প্রভাব, এবং বিভিন্ন গ্যাসের বৃদ্ধি পৃথিবীর উষ্ণতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। সমুদ্রের জলের উষ্ণতার বৃদ্ধির ফলে জলের গভীরে থাকা মাছেদের মৃত্যু হচ্ছে, মেরু অঞ্চলে বরফের গলন বেশি মাত্রায় হচ্ছে, খরা, বন্যা, মহামারীর তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন দিন। মৌসুমি বায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। এমনকি আবহাওয়ার খামখেয়ালীপানা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং সব মিলিয়ে আমরা কি বিপদের খুব কাছাকাছি আছি?  বড়োসড়ো প্রশ্ন চিহ্ন

whatsapp logo