Health Tips: বহু গুণে সমৃদ্ধ হলেও কাদের ক্ষেত্রে ইলিশ খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে জানেন!
ইলিশের নাম শুনলেই ভোজনরসিক বাঙালির জিভে জল চলে আসে। তা সে ইলিশ ভাপা-ই হোক বা সরষে ইলিশ, ইলিশের পাতুরি কিংবা ইলিশ পোলাও। কিছু না হলেও গরম গরম ইলিশ ভাজা আর ইলিশের তেল দিয়ে পুরো ভাত মেখেই তা চেটেপুটে খায় বাঙালি। বর্ষার ইলিশ কিনতে লাইন লেগে যায় বাজারে। এখন তো সব ঋতুতেই কমবেশি ইলিশ কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জনের পর ইলিশ ধরা ছিল মানা। এই নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন সেকালের মানুষ। তাই বর্ষাকালেই এই ‘রুপালি শস্য’ যথেষ্ট পরিমাণে মিলত।
শুধুমাত্র স্বাদের দিক থেকেই নয় পুষ্টির দিক থেকে বিচার করলেও মৎস্যমহলের সম্রাট এই ইলিশ। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিঙ্ক সহ আরও বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে ইলিশে যা হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, চোখ এমনকি হাড়ের কাঠামো সবই মজবুত ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এতে আছে যথেষ্ট পরিমাণে পুফা (PUFA) বা পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ডায়বেটিস, হার্টের রোগ এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর পাশাপাশি স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখতেও সাহায্য করে পুফা। হাই ডেনসিটি কোলেস্টেরল বা এইচডিএল সমৃদ্ধ পুফা হৃদযন্ত্রের রক্তবাহী ধমনীগুলিকে সুস্থ ও সচল রাখতে সাহায্য করে।
তেনুয়ালোসা ইলিশা-এর অজস্র পুষ্টিগুণ যেমন আছে তেমনই কিছু খারাপ গুনও আছে। এ কথা অনেকেই জানেন না, কারও কারও ক্ষেত্রে ইলিশ খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপদজনক হয়ে দেখা দিতে পারে। শুধু ইলিশই নয় যে কোনো রকমের সামুদ্রিক মাছ খাওয়া প্রাণঘাতী হতে পারে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, যে সমস্ত মানুষ কিডনির অসুখের শিকার বা যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ইলিশ খাওয়া একদমই উচিত নয়। এরপরেও ঝোঁকের বশে ইলিশ খেলে, রোগীর কিডনির সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে। এমনকি সারা শরীরে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। এলার্জির কারণে শারীরিক অস্বস্তিও বাড়তে পারে। শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে এক সময়। ভীষণ রকমের অ্যালার্জি কোনো কোনো সময় প্রাণঘাতীও হতে পারে। তাই এই ধরনের কোনো অসুখ থাকলে ইলিশ কে এড়িয়ে চলাই কাম্য।
এই অতিমারির কালে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। দৈনিক ৫০-১০০ গ্রাম মাছ খাওয়া প্রয়োজন। তবে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের পর থেকে শুরু করে সরস্বতী পুজোর আগে পর্যন্ত ইলিশ মাছ না খাওয়াই ভালো। এই সময় অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ, যেমন-পমফ্রেট, আড়, ভেটকি, বেলে – এই জাতীয় মাছ খাওয়া যেতে পারে।