নব্বইয়ের দশকের বিনোদন। ছিল না এত চ্যানেল। টিআরপির তখনও হয়ে ওঠেনি রাজা। অভিনেতা-অভিনেত্রী, প্রযোজক-পরিচালকরা শুধুই মগ্ন থাকতেন সৃষ্টিসুখে। সেই সময় দূরদর্শনে দুপুরের স্লটে আবির্ভাব হল ‘মহাপ্রভু’-র। দুপুরের ওই বিশেষ সময় রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যেত ‘মহাপ্রভু’-কে এক ঝলক দেখার জন্য। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গৃহিণীরা ডিডি বাংলায় এই ধারাবাহিকটি দেখতেন। সদ্য কিশোরীরাও স্কুল কামাই করে বসে পড়ত মায়ের পাশে। ‘মহাপ্রভু’- র চরিত্র আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছিল এক নবাগত অভিনেতার। পরবর্তীকালে ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে চিনেছিল যীশু সেনগুপ্ত (Jissu U.Sengupta) নামে। কবেই অফ এয়ার হয়েছে ‘মহাপ্রভু’। যীশুর জীবনে এসেছে চড়াই-উতরাই। ঋতুপর্ণ ঘোষ (Rituparno Ghosh) আবিষ্কার করেছিলেন তাঁর অভিনয় প্রতিভাকে। ‘মহাপ্রভু’-র রূপ কেউ ভোলেননি। তার প্রমাণ আরও একবার মিলল ‘সুপার সিঙ্গার ’-র মঞ্চে।
স্টার জলসার জনপ্রিয় সিঙ্গিং রিয়েলিটি শো ‘সুপার সিঙ্গার’-এর চতুর্থ তম সিজনের এই বিশেষ পর্বের প্রোমো ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সুপার ভাইরাল। নদীয়ার শান্তিপুর অঞ্চল থেকে আগত প্রতিযোগী অনুরাধা (Anuradha) ‘শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য’ কীর্তনটি গাইছিলেন। মঞ্চে সাজানো ছিল বাল গোপালের মূর্তি। অনুরাধা প্রণাম করতে করতেই হঠাৎ শুনতে পেলেন পুরুষ কন্ঠের ডাক ‘অনুরাধা’। মঞ্চ ভরে গেল এক নৈসর্গিক আলোর ছটায়। আবির্ভূত হলেন ‘মহাপ্রভু’ রূপী যীশু। পরনে সাদা ধুতি-কালো পাড় উত্তরীয়। কপালে রসকলি। কৃষ্ণভাবের আবেশে মহাপ্রভু মুগ্ধ করলেন বিচারকদের।
এদিন বিশেষ অতিথি হিসাবে শোয়ে উপস্থিত ছিলেন ‘বেশরম রং’ খ্যাত শিল্পা রাও (Shilpa Rao)। বিচারকের আসনে ছিলেন শান (Shaan), মোনালি ঠাকুর (Monali Thakur), রূপম ইসলাম (Rupam Islam)। মহাপ্রভুকে দেখে কার্যতঃ চমকে উঠেছিলেন মোনালিও। কারণ তিনিও নাইন্টিজ কিডজ। অনুরাধার চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠেছিল। ‘সুপার সিঙ্গার’ -এর মঞ্চে তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে ‘মহাপ্রভু’-র থিম সং। স্মিত হাসি যীশুর মুখে। এই পর্ব আবারও প্রমাণ করল আপামর বাঙালির কাছে তাঁদের চিরন্তন মহাপ্রভু হয়েই রয়ে গিয়েছেন যীশু সেনগুপ্ত । এই স্থান আর কোনোদিন কেউ দখল করতে পারবেন না।
যীশু ও মহাপ্রভুকে নিয়ে লেখা হয়তো ফুরাবে না। সেই কথা নাহয় আরও একদিন। আপাতত অপেক্ষা আগামী শনিবার ও রবিবার রাত সাড়ে ন’টার স্লটের। ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে ফিরে এলেন ‘মহাপ্রভু’।