নিয়োগ দূর্নীতির শিকড় অনেকদিন আগেই প্রবেশ করে গিয়েছিল টালিগঞ্জের অন্দরে। হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায় (Haimonti Ganguly) যতই দাবি করুন, তিনি কিছুই জানেন না, তা যুক্তিসঙ্গত নয়। এবার সন্দেহের তীর বনি সেনগুপ্ত (Bony Sengupta)-র দিকে। হুগলির যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)-এর সাথে বনির আর্থিক লেনদেনের নথি উঠে এসেছে ইডির হাতে। এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে বনিকে তলব করেছিল সিবিআই। নির্দেশ ছিল বনির আয়-ব্যয় সংক্রান্ত নথিপত্র সাথে নিয়ে আসার।
সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে গিয়েছিলেন বনি। জিজ্ঞাসাবাদের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, কুন্তল তাঁকে সিনেমা তৈরির কথা বলেছিলেন। এই কারণে অগ্রিম বাবদ চল্লিশ লক্ষ টাকা কুন্তলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে জমা হয় বনির অ্যাকাউন্টে। এই অর্থ ব্যবহার করে নিজের বিলাসবহুল রেঞ্জ রোভার গাড়িটি কিনেছেন বনি। কুন্তলের সল্টলেকের বাড়িতেও বনির নিয়মিত যাতায়াত ছিল তা এদিন স্বীকার করেছেন তিনি। তবে ফিল্ম তৈরি না হওয়ার কারণে কুন্তলের জন্য প্রচুর স্টেজ শো করেছেন বনি। অপরদিকে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বনির মা পিয়া সেনগুপ্ত (Piya Sengupta)।
পিয়া জানিয়েছেন, কুন্তলের সাথে অনেক তারকার পরিচয় ছিল। ধীরে ধীরে তা জানা যাবে বলে মনে করেন তিনি। তবে কুন্তলের প্রযোজনার শখ ছিল অনেকদিন ধরেই। বেশ কিছু মিউজিক ভিডিও বানিয়েছিলেন তিনি। শুধুমাত্র বনি নয়, কুন্তল প্রযোজিত মিউজিক ভিডিওতে টলিউডের একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কাজ করেছেন বলে দাবি পিয়ার। সেই মিউজিক ভিডিওর রিলিজ অনুষ্ঠানেও উপস্থিত থাকতেন তারকারা। তবে পিয়া জানালেন, সিনেমা তৈরির অগ্রিম টাকা বনি নিজের অ্যাকাউন্টে নেননি। 2017 সালে তাঁকে এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন কুন্তল। সেই সময় বনি একটি রেঞ্জ রোভার গাড়ি কিনেছিলেন। সেই গাড়ির সংস্থার অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা করেছিলেন কুন্তল। গাড়িটি বনির নামে থাকার ফলে ডাক পড়েছে তাঁর বলে মনে করছেন পিয়া।
অর্থাৎ বনি টাকা নিয়েছিলেন, তা স্বীকার করে নিলেও বনির অ্যাকাউন্টে সেই অর্থরাশি ঢোকার কথা অস্বীকার করছেন পিয়া। অথচ ইডির প্রাপ্ত নথি কিন্তু বলছে অন্য কথা। কুন্তলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বনির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর্থিক লেনদেনের স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে তাতে।
পরিশেষে, এই ঘটনার সাথে হয়তো যুক্ত থাকতে পারে আরও একটি ঘটনা। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় প্রায় হঠাৎই বনি যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। গেরুয়া শিবিরে তাঁর যোগদান ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি করেছিল চাঞ্চল্য। কিন্তু পরবর্তীকালে বনি বিজেপি থেকে ইস্তফা দেন। তাহলে কি বনি আগেই জানতে পেরেছিলেন কুন্তলের দূর্নীতির ব্যাপারে? এই কারণেই কি নিজেকে বাঁচাতে বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি?
View this post on Instagram