“আজকে যদি বেঙ্গলি মিডিয়ামে কেউ নিজের সন্তানকে পড়ায় তাহলে কি সে কি কোন ইন্টারভিউ ক্র্যাক করতে পারবে? বাংলা মিডিয়ামে পড়া কোন ছাত্র কর্পোরেট হাউসে ভালো চাকরি পেয়ে বাড়ি কি যেতে পারবে?” একটি সংবাদমাধ্যমে বিতর্ক সভায় এসে এই মন্তব্য করেন আরজে অয়ন্তিকা। রেডিও জকির এহেন মন্তব্যে ফুঁসছে সোশ্যাল মিডিয়া। রীতিমত ভয়ানক শোরগোল পড়ে গিয়েছে তার এই মন্তব্যে। নেটিজেনরাও তাদের মতামত দিতে শুরু করেছেন নানা পোষ্টের মাধ্যমে। বাদ নেই টলিউড ইন্ডাস্ট্রিও। বাংলা সিনেমা সিরিয়াল এর বিভিন্ন বিশিষ্টজনেরা সোচ্চার ঘোষণা করছেন যে তারা বাংলা মিডিয়াম এবং এতে তারা কুণ্ঠাবোধ করেন না।
এবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যে বাংলা ভাষায় কতটা সাবলীল বাংলা ভাষার সঙ্গে তাঁর নৈকট্য যে অনেকখানি তা তার লেখনি দেখলে বোঝা। তিনি এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় অয়ন্তিকার নাম নিয়ে এহেন বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য এক হাত নিলেন।
চিঠির শুরুতেই অয়ন্তিকার সঙ্গে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়কে সহমত হতে দেখা যায়। তিনি তারপর ব্যঙ্গাত্মক সুরে বলেন আবির চট্টোপাধ্যায় কিংবা ঋত্বিক চক্রবর্তী অথবা অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় এরা বাংলা মিডিয়ামের ছাত্র তাই এরা সেভাবে সফল হতে পারেনি। এরপর এই অভিনেতা রাহুল রেডিও জকিকে মুখোমুখি বসে বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানান। তারপর আবার তিনি বলেন যে যদি অয়ন্তিকা অনুমতি দেন তবে এই জিনিস হবে কারণ আলোচনা সমানে সমানে হয় সেখানে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় তার ধারে কাছেও আসতে পারবেন না সাফল্যের নিরিখে।
তারপর তিনি অয়ন্তিকাকে বিদ্রুপ করে বলেন যে তিনি একজন ব্যর্থ ছবির ব্যর্থ অভিনেত্রী।অয়ন্তিকার সাথে রাহুল চিরদিনই তুমি যে আমার সিনেমায় কাজ করেছিলেন। বাংলা সাহিত্য নিয়ে মিরচি বাংলায় অয়ন্তিকার বেশিরভাগ কাজ ছিল। সানডে সাসপেন্স হোক কিংবা প্রেম ডট কম বাংলা সাহিত্যের চর্চার ফসল তা তিনি যে বেমালুম ভুলে গিয়েছেন সেই কথাই বলেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষে তিনি উপদেশ দেন যে অয়ন্তিকা যার অধীনে কাজ করতেন সে একজন কিংবদন্তি বেতারশিল্পী। মীর সকল ভাষাকে সমান সম্মান দেন। তিনি অয়ন্তিকাকে মীরের সঙ্গে আবার মিশে দেখার উপদেশ দেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন প্রায় সব পোস্ট এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই। নিজেদের মাতৃভাষার যোগ্য সম্মানের জন্য সরব হয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী এবং শিল্পীরা। অভিনেতার অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় অর্থাৎ গাঁটছড়ার রাহুল ফেসবুকে লেখেন যে তিনি গর্বের সঙ্গে বলতে পারেন যে তিনি বাংলা মিডিয়াম। তার এই পোস্টে ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য অভিনেতা অভিনেত্রীরা জানেন যে বাংলা মিডিয়ামে পড়ে তাদের কোনো লজ্জা নেই বরং তারা অনেক বেশি গর্বিত।