সিনেমা থেকে সিরিয়াল, তাঁর যাতায়াত অবাধ। টেলিভিশন থেকে বড়পর্দাতেও নায়ক নায়িকা তৈরি করেছেন তিনি। রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty), টলিউডের প্রথম সারির পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর হিট সিনেমার সংখ্যা প্রচুর। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবি থেকে শুরু করে ভিন্ন ধরণের ছবিও পরিচালনা করেছেন তিনি। ইদানিং রাজের পরিচালনার ধরণে এসেছে ভিন্নতা। চিরাচরিত মশলা এন্টারটেনার ছবি থেকে সরে অন্য স্বাদের ছবিতে মজেছেন তিনি। কিন্তু এত সাফল্যের শুরুটা কেমন ছিল?
বরাবরই রাজের স্বপ্ন ভিন্ন কিছু করার। তাঁর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে তাঁর কাজেও। চাকরি করার ইচ্ছা কোনোকালেই ছিল না তাঁর। বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে কয়েকজন বন্ধু মিলে একসঙ্গে ভাড়া থাকতেন। এই বন্ধুদের মধ্যে একজন ছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ। তিনিই ছিলেন সবার মাঝে একমাত্র রোজগেরে। তাও ডাবিং করে মাত্র ১০০ টাকা উপার্জন করতেন তিনি। অন্যদিকে রাজের শুরু থিয়েটার দিয়ে। রীতিমতো সংগ্রাম করে তৈরি করেছিলেন নিজের কেরিয়ার। সামান্য ডাল ভাত ভাগ করে খাওয়া থেকে শুরু করে পায়ে হেঁটে নন্দন থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত যেতেন তিনি।
বাড়ি ছেড়ে এসেছিলেন, তাই একটা টাকাও কখনো নেননি বাড়ি থেকে। কিন্তু যেখানে থাকতেন সেখানকার ভাড়া? একটা সময় ছিল যখন ৪০০ টাকাও কীভাবে রোজগার করবেন তা নিয়ে চিন্তা করতে হত রাজকে। পরিচালক বলেছিলেন, সে সময়ে বন্ধু রুদ্রনীলের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, যেকোনো একটা কাজ জোগাড় করে দিতে যাতে অন্তত ৪০০ টাকা উপার্জন হয়। সে সময়ে রুদ্রনীলের লেখা একটি গল্পে হনুমানের চরিত্র পেয়েছিলেন রাজ। রিহার্সালের মাঝে হুপ হুপ করে মাসে চার দিনে ১০০ টাকা করে মোট ৪০০ টাকা উপার্জন করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, পরিচালকের সহকারীর কাজও করেছিলেন রাজ।
পরিচালকের কথায়, তাঁর মনে হয়েছিল যেটা পেয়েছেন সেটাও তো পাওয়ার কথা ছিল না। তাই সেটাকেই ধরে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা ছিল, রুদ্রনীলকেও ভুল প্রমাণ করার জেদ ছিল। এই ভাবেই শুরু। টেলিভিশনে কাজ করার পর তাঁর প্রথম ছবি ছিল ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’। তারপর থেকে পেছন ফিরে দেখতে হয়নি রাজকে। আগামীতে বুদ্ধদেব গুহর উপন্যাস অবলম্বনে ‘বাবলি’ ছবি পরিচালনা করতে চলেছেন তিনি।
View this post on Instagram