রাজেশ শর্মা (Rajesh Sharma)-কে প্রথমবার সকলে লক্ষ্য করেছিলেন অপর্ণা সেন (Aparna Sen) পরিচালিত ফিল্ম ‘পারমিতার একদিন’-এ। ধীরে ধীরে বলিউডে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েমের নেপথ্যে রয়েছে এক না হেরে যাওয়া লড়াই। অভিনেতা হতে চেয়েছিলেন রাজেশ। কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের পক্ষে আশি-নব্বইয়ের দশকে অভিনেতা হতে চাওয়ার ইচ্ছা ছিল নিছক বিলাসিতা। হাল ছাড়েননি রাজেশ। থিয়েটার করতেন। ফলে সম্ভব ছিল না ইচ্ছা থাকলেও দশটা-পাঁচটার চাকরি। কোনো কুন্ঠা বোধ না করে ট্যাক্সি চালাতেন রাজেশ। বর্তমান দর্শকদের অনেকেই হয়তো সেই সময় তাঁর ট্যাক্সিতে সফর করেছেন। কিন্তু পরিচিতি ছিল না। পরবর্তীকালে হয়তো বড় পর্দায় দেখে মিল খুঁজে পেয়েছেন অভিনেতার সাথে কোনো এক ট্যাক্সি ড্রাইভারের।
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় (Saswata Chatterjee)-র টক শো ‘অপুর সংসার’-এ এসে নিজের বিগত দিন ও লড়াইয়ের প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন রাজেশ। তিনি জানিয়েছিলেন ‘পারমিতার একদিন’-এ অভিনয়ের অভিজ্ঞতাও। সেই সময় পুরোদমে থিয়েটার করতেন রাজেশ। অপর্ণা এসেছিলেন তাঁর থিয়েটার দেখতে। এরপর তিনি একদিন রাজেশকে বাড়িতে ডেকে পাঠালেন। বাড়িতে পৌঁছালেন রাজেশ। অপর্ণা তাঁকে প্রথমেই কিছু না বলে চিত্রনাট্য পড়ে শোনাতে লাগলেন। সেই সময় রাজেশের মনে হয়েছিল, তিনি হয়তো কোনো ছোট চরিত্রে অভিনয় করবেন। কিন্তু এরপর তাঁকে চমকে দিয়েছিলেন অপর্ণা।
তিনি রাজেশকে বলেন, তাঁকে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta)-র স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। ঋতুপর্ণা তখন নামী তারকা। তাঁর স্বামীর চরিত্রে অভিনয়ের কথা শুনে নার্ভাস হয়ে রাজেশ বলেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) বা অন্য কোনো নায়ককে নিতে। সেই সময় প্রসেনজিৎ-এর সাথে ঋতুপর্ণার অনস্ক্রিন রসায়নে মুগ্ধ আপামর বাঙালি। কিন্তু ছক ভেঙে দেওয়া অপর্ণা ছিলেন অনড়। শেষ অবধি রাজেশকে রাজি করিয়েই ছেড়েছিলেন তিনি।
‘পারমিতার একদিন’-এর পর রাজেশকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক চরিত্রে অভিনয় করে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন তিনি। সব ধরনের চরিত্রে অনায়াস অভিনয় প্রমাণ করেছে, রাজেশ একজন ভার্সেটাইল অভিনেতা।