রক্ত মাংসের আয়ু কত দিন? এই গড়ে ৭০ হবে। কিন্তু, যখন আমরা স্মৃতির পাতা উল্টে দেখি তখন মনে হয় এইতো সেদিনই কথা হল, কত গল্প করলাম, সব স্মৃতি তখন ভার করে আসে মনে। মন কিছুতেই বুঝতে চায়না যে যার কথা ভাবছি সে আর নেই। আজকের দিনেই প্রয়াত হয়েছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম পরিচালক এবং শিল্পী ঋতুপর্ণ ঘোষ। তারই স্মরণে মজলেন ঋতুপর্ণা।
২০১৩ র ৩০ শে মে চির বিদায় জানান এই উজ্জ্বল নক্ষত্র। মৃত্যুর আগে ঋতুপর্ণ প্রায় দশ বছর ধরে ডায়াবেটিস (ডায়াবেটিস মেটিলাস টাইপ ২) রোগে এবং পাঁচ বছর ধরে প্যানক্রিটিটিস রোগে ভুগছিলেন। এছাড়াও তার অনিদ্রা রোগ ছিল এবং সেই জন্য তিনি ঘুমের ওষুধ খেতেন। মাত্র ৪৯ এ চির নিদ্রায় চলে যান তিনি। তবে ওনার ব্যাপারে বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে জীবনের শেষ বছরগুলিতে তিনি রূপান্তরকামী জীবনযাত্রা নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করছিলেন। তিনি নিজের সমকামী সত্ত্বাটিকে খোলাখুলিভাবে স্বীকার করে নেন, যা ভারতের চলচ্চিত্র জগতের খুব কম মানুষ করেছেন।
অমিতাভ, ঐশ্বর্য, বিপাশা, কিরণ খের থেকে শুরু করে বলিউডের বহু তারকা জায়গা পেয়েছেন ঋতুর ছবিতে। জায়গা পেয়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ‘দহন’ ‘উৎসব’ এ অভিনয় করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে শুধু মাত্র কমার্শিয়াল সিনেমার জন্য তিনি পারফেক্ট নন, ঋতুপর্ণ জানেন একজন কমার্শিয়াল ফিল্মি আর্টিস্টকে কিভাবে আর্ট ফিল্মের আর্টিস্ট বানানো যায়। উল্লেখ্য, অর্থনীতির ছাত্র ছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। তিনি তার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার ক্রিয়েটিভ আর্টিস্ট হিসেবে। ১৯৯২ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম ছবি হীরের আংটি। দ্বিতীয় ছবি উনিশে এপ্রিল মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। এই ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ কাহিনিচিত্র বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পান। দুই দশকের কর্মজীবনে তিনি বারোটি জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছিলেন।
View this post on Instagram
আজ তিনি সশরীরে না থাকলেও আছেন মননে। আজকের দিনের জন্য ঋতুপর্ণ স্মরণ করলেন ঋতুপর্ণা। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন, “কতদিন হয়ে গেল তোমার সাথে বসে গল্প করিনা, দেখাও হয় না…..” দেখা হয়তো হবে না, তবে আজও পর্দায় তিনি জীবন্ত।