Tourism: দীঘা-পুরী-দার্জিলিং নয়, ছুটি পেলেই ঘুরে আসুন ছবির মতো সুন্দর এই জায়গাটি থেকে
বাঁকুড়া জেলা থেকে সাতান্ন কিলোমিটার, রানীগঞ্জ থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি অফবিট ডেস্টিনেশন হল বিহারীনাথ পাহাড়। এই অঞ্চলের মধ্যে জৈন সংস্কৃতি অনেকটা খুঁজে পাওয়া যায়। কংক্রিটের জীবনে থাকতে থাকতে যদি দম আঁটকে আসে, তাহলে দীঘা, পুরী, দার্জিলিংয়ের বদলে বাঁকুড়ার এই ডেস্টিনেশনটি আপনার জন্য একেবারে উপযুক্ত। আর যদি ফটো তোলার শখ থাকে তাহলে কিন্তু ক্যামেরা হাতে নিতে এক্কেবারে ভুলবেন না, এত সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যে ঘেরা স্থান বাংলার বুকে খুঁজলে খুব কমই পাবেন।
বাঁকুড়া জেলার দীর্ঘতম পাহাড় বিহারীনাথ প্রায় ১৪৪৯ ফুট উঁচু থেকে যেন আপনার জন্য দুহাত বাড়িয়ে আপনাকে ডাকছে প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যাওয়ার জন্য। যদি সড়ক পথে যান তাহলে মোটামুটি এই বিহারীনাথের কাছাকাছি আসতেই মেঠো গন্ধ আপনার নাকে ভেসে আসবে। এছাড়াও সেখানকার আদিবাসী মহিলাদের কাঠ নিয়ে যাওয়ার সুদৃশ্য আপনার চোখকে একেবারে একেবারে গ্রামের পথ ধরে সেই বিহারীনাথের দিকে টেনে নিয়ে যাবে।
নদী, জঙ্গল আর পাহাড় এই তিনটিই যদি একসঙ্গে চাক্ষুষ করতে চান তাহলে তো আপনাকে বিহারীনাথ পাহাড়ে যেতেই হবে। প্রাণবন্ত সবুজ আর দামোদর নদের কুলুকুলু প্রবাহিত জল আর সুন্দর পরিবেশ আপনার মনকে ওখান থেকে আসতেই দেবে না। দু-একদিনের ছুটি পেলে তাই আর মিস করবেন না অসাধারণ এই জায়গায়। সবুজ, শ্যামল প্রান্তর আর কুলুকুলু দামোদর নদী সব মিলিয়ে অসাধারণ দৃশ্য ঘুরেই আসুন, এই জায়গা থেকে দেখবেন মন বলবে আবার একবার ছুট্টে পালিয়ে যাই।
জল, জঙ্গল, পাহাড় ঘেরা বিহারীনাথের প্রথম আকর্ষণ হল বিহারীনাথ পাহাড়। কাছাকাছি যাওয়ার একটু আগে থেকেই সড়ক পথে একটু উঁচু হয়ে দেখতে পাবেন পাহাড়ের চূড়ো। মোটামুটি অক্টোবরের পর থেকে মার্চ পর্যন্ত বিহারীনাথ দর্শনের জন্য একেবারে উপযুক্ত, গরমকালে গেলে কিন্তু ভীষণ কষ্ট পাবেন। এই অঞ্চলে বেশ গরম পড়েছে তবে বসন্তের আগে গেলেই শিমুল, পলাশ দেখতে পাবেন।
বিহারীনাথের অসাধারণ পর্বতের সুন্দর দৃশ্য ছাড়াও এখানে গেলে আপনি নানান রকমের ফুল, পাখির কিচিরমিচির ডাক। এ ছাড়া নানান রঙের প্রজাপতি দেখতে পারবেন গায়ের রাস্তা দিয়ে হাঁটতেও মন্দ লাগবে না পাহাড়ি বন্য জীবন এক ঝলক দেখতে পারবেন বিহারীনাথে গেলে যারা ট্র্যাকিং করতে পছন্দ করে।
বিহারীনাথের বেড়াতে গেলে আর একটি অন্যতম আকর্ষণ হল বিহারীনাথ মন্দির। এখানে বিহারীনাথ পাহাড়ের পাদদেশে একটি শিবের ছোট্ট মন্দির আছে, এখানে শিবলিঙ্গটি বেশ জাগ্রত। প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের নাম থেকেই এই পাহাড়টির নাম করা হয়। এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য জলের ধারা মন্দিরের ঘন্টার গভীর শব্দ আপনাকে অদ্ভুত একটা শান্তির জীবন এনে দেবে, এই এক দু দিনের জন্য। এখানে ঘটা করে শিবরাত্রি উৎসব পালন করা হয়, সেই সময়ও দেশ দেশান্তর থেকে প্রচুর তীর্থযাত্রীরা এখানে আসেন।
ওই যে কথায় বলে না, গেঁও যোগী ভিক পায় না, এই ধরনের জায়গা গুলো বোধহয় তেমনি তাই এত ফাঁকা ফাঁকা। মানুষ পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে দূরে বিদেশে একটু আনন্দ করতে চায়। অনেক অনেক টাকা খরচা করে। কিন্তু বিশ্বাস করে দেখুন, এই জায়গা গুলিতেও আপনি যদি দু-একদিনের ছুটিতে যেতে পারেন তাহলে দেখবেন কত আনন্দ হবে। বিদেশে গেলে যে আনন্দ পাবেন, তার থেকে কোন অংশে কম নয় এই জায়গাগুলোর আনন্দ। হাতে দু-এক দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ির সদস্যদের নিয়ে চটজলদি বেরিয়ে পড়ুন বিহারীনাথের উদ্দেশ্যে।