সিনেমায় নায়ক নায়িকার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে থাকলেও একথা কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না যে খলনায়ক খলনায়িকার গুরুত্বও অনেক। তারা আছেন বলেই নায়ক নায়িকার জয়জয়কার হয়। আর টলিউড ইন্ডাস্ট্রির প্রসঙ্গ যদি ওঠে তাহলে বলতে হবে এখানেও দর্শক দেখেছেন এক সে বড় কর এক ভিলেনদের। আর তাঁদের মধ্যে যাঁর কথা না বললেই নয় তিনি হলেন সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় (Sumit Ganguly)। তাঁর এক চাহনিতেই বুক কাঁপত দর্শকদের। এমনকি সিনেমার গব্বরের মতো তাঁর নাম করে ভয় দেখানো হত বাচ্চাদেরও। এমনই তাঁর দাপট ছিল যে অনেক সময় রিয়েল লাইফেও ছাপ পড়ত তাঁর রিল লাইফ অভিনয়ের।
টলিপাড়ার জাঁদরেল ভিলেন
সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়ের মূল ইউএসপি ছিল তাঁর দুই নীলচে ধূসর চোখ। এই চোখের চাহনিই এক সময় কাঁপিয়েছে ইন্ডাস্ট্রি। নব্বইয়ের দশকের অধিকাংশ ছবিতেই তাঁর জায়গা পাকা ছিল খলনায়ক হিসেবে। চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর ‘কেঁচো খু্ঁড়তে কেউটে’ ছবিতে প্রথম বার ভিলেন রূপে দেখা যায় সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়কে। তারপর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ‘যুদ্ধ’, ‘ঘাতক’, ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’র মতো একের পর এক ছবিতে তাঁর অভিনয় দেখেছে দর্শক। কিন্তু জানেন কি, সুমিতের এই ভিলেন হওয়া কিন্তু ভাগ্যের ফেরেই।
হতে চেয়েছিলেন হিরো
আরো পাঁচজনের মতো সিনেমার হিরো হতেই এসেছিলেন তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে। কিন্তু হতে চেয়েছিলেন এক আর হয়ে গেলেন আরেক। সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, তিনি ভেবেছিলেন যে যা রোল পাবেন তাই করবেন। কিন্তু দর্শকরা তাঁকে ভিলেন হিসেবেই এত ভালোবাসা দিয়েছেন যে তিনি ধন্য।
সুমিত নিজে কাকে ভয় পান?
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এক সময়ে তাঁকে প্রচণ্ড ভয় পেত ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। মায়েরা তাঁকে দেখিয়ে বাচ্চাদের ভয় দেখাতেন। সে সময়ে সিনেমায় তাঁর ভিলেনের অভিনয় দেখে বাচ্চারা ঠিক সময় খেয়েছে, ভয় পেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, পড়তে বসেছে, স্কুলে গিয়েছে। সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, তাঁর গর্ব হয় যে তিনি অন্তত ৮-৯ কোটি বাচ্চাকে এভাবে ভয় দেখিয়ে মানুষ করেছেন। তারা হয়তো এখন বড় হয়ে চাকরি বাকরি করছে। তবে সুমিত নিজে কাকে ভয় পান? অভিনেতা জানান, তাঁর নিজের মেয়ে তাঁকে একটুও ভয় পায় না। বরং তিনি নিজেই মেয়েকে ভয় পান।