দ্বাদশ শ্রেণিতে ফেল করে আইপিএস অফিসার! ‘১২ ফেল’ কাহিনির আসল অনুপ্রেরণা কে?
কিছু কিছু সিনেমা বা সিরিজ মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শোরগোল ফেলে দেয় দর্শক মহলে। ‘১২ ফেল’ (12th Fail) তেমনি একটি ছবি। বিক্রান্ত মাসে অভিনীত ছবিটি মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। আর এর মধ্যেই সব জায়গা থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এসেছে এই ছবিটির জন্য। কিউ জানেন কি, এই ছবিটি আসলে বাস্তব চরিত্রের উপরে নির্ভর করে তৈরি হয়েছে। আইপিএস মনোজ কুমার শর্মার (Manoj Kumar Sharma) জীবনকাহিনি উঠে এসেছে ১২ ফেল ছবিতে।
১৯৭৭ সালে মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলার বিলগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মনোজ কুমার শর্মা। তাঁর বাবা ছিলেন কৃষি বিভাগে কর্মরত। ছোট থেকেই আর্থিক অনটনের মধ্যেই বড় হয়েছেন মনোজ। এদিকে পড়াশোনাতেও বিশেষ আগ্রহ পেতেন না তিনি। নবম শ্রেণি এবং দশম শ্রেণির পরীক্ষায় থার্ড ডিভিশন পেয়ে পাশ করেছিলেন মনোজ। এমনকি একাদশ শ্রেণিতেও টেনেটুনে পাশ করতে পেরেছিলেন তিনি। জানলে অবাক হবেন, দ্বাদশ শ্রেণিতে শুধুমাত্র হিন্দি বিষয়েই পাশ করতে পেরেছিলেন মনোজ। বাকি সব বিষয়ে ফেল করেন তিনি।
আসলে সে সময়ে সেখানকার এসডিএম তখন স্কুলের পরীক্ষায় নকল করার বিষয়টি নিয়ে খুব কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তখনই মনোজ উপলব্ধি করেন যে স্কুলের প্রিন্সিপালের উপরেও পদমর্যাদার কেউ আছেন। দ্বাদশ শ্রেণিতে অকৃতকার্য হওয়া মনোজ তখন সিদ্ধান্ত নেন যে মধ্যপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়ে ডেপুটি এসপি হবেন। মনোজ জানিয়েছিলেন, তিনি গোয়ালিয়রে এসে তিনি বোঝেন যে ডিএম এসডিএম এরও উপরে। তবে তার জন্য ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। এরপরেই শুরু হয় মনোজের কঠোর সাধনা।
পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে দিল্লিতে আসেন মনোজ। সেখানে টেম্পো চালিয়ে উপার্জন করতেন তিনি। শুধু তাই নয়, ফি দেওয়ার জন্য লাইব্রেরিতে কাজ করার পাশাপাশি ধনী লোকদের কুকুরদের হাঁটাতে নিয়ে যাওয়ার কাজও করতেন তিনি। ওই উপার্জনের টাকায় পেট চলত তাঁর। ঘুমাতেন ফুটপাতে। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নিতেই তাঁর জীবনে আসে শ্রদ্ধা যোশী। কিন্তু এই সম্পর্কটা শ্রদ্ধার বাড়ি থেকে মেনে নেয়নি। হাল ছাড়ার পাত্র ছিলেন না মনোজও। প্রথম তিন বার পরীক্ষায় ব্যর্থ হন তিনি। চতুর্থ বারে ইউপিএসসিতে পাশ করেন মনোজ, তাও আবার ১২১ তম স্থান নিয়ে। আইআরএস অফিসার হন শ্রদ্ধা যোশীও। মনোজের কৃতিত্ব পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়ার মাধ্যমেই জানতে পারছেন সকলে।