‘বেল্ট ম্যান’ রঞ্জিত মল্লিক ১৯৭১ এ ‘ইন্টারভিউ’ দিয়ে কাজ শুরু করেন। এখনো ইন্টারভিউ দেন তবে সেদিনের ‘ইন্টারভিউ’ ছিল তাঁর জীবনের প্রধান মাইলস্টোন। এখন তাঁর বয়স প্রায় ৭৬, বার্ধক্য তাঁকে সেভাবে ছুঁতে পারেনি। তাঁর উজ্জ্বল গৌড় বর্ণ শরীর, মুখের হাসি, স্নিগ্ধ রূপ আজও দর্শকদের সমান ভাবে টানে।
১৯৭২ এর পর থেকে বাংলা কমার্শিয়াল ফিল্মের নায়ক হয়ে গেলেন তিনি। করলেন ‘মৌচাক’, ‘রাগ অনুরাগ’, ‘শ্রীকান্তের উইল’, ‘কপালকুণ্ডলা’ র মতো সিনেমা। এমনকি সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘শাখা প্রশাখা’-তেও তিনি অভিনয় করেন।
উত্তম কুমারের সঙ্গেও স্ক্রিন শেয়ার করেছেন বাংলা সিনেমার বেল্ট ম্যান। আজও উত্তম-রঞ্জিতের ‘মৌচাক’, ‘দুই পৃথিবী’, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ সেরার সেরা হয়ে রয়েছে। বাংলার দর্শক আজও উত্তম-রঞ্জিতের জুটি বেজায় এঞ্জয় করেন। বিশেষত “চাবকে পিঠের ছাল তুলে দেব!” হল এই বেল্ট ম্যানের সেরা ডায়ালগ। আজও মানুষ মজা করে রঞ্জিত মল্লিকের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন যে দাদা কটা বেল্ট ঘরে রাখেন। তবে এই মল্লিক বাবু কিন্তু এক্কেবারে ফ্যামিলি ম্যান।
সালটা ১৯৮৪, উত্তমকুমারের মৃত্যুর পরে তখন খাবি খাচ্ছে টালিগঞ্জের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তখন রঞ্জিত মল্লিক একাই ‘শত্রু’ করে কাঁপিয়ে দেন। এখনো পর্যন্ত বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি প্রায় সর্বমোট ৭৫ টির উপর বাংলা সিনেমা উপহার দিয়ে গেছেন দর্শকদের। কিন্তু এতো সফলতার মাঝেও তাঁর ব্যক্তিগত জীবন একই রকম রঙিন থেকেছে। স্ত্রী দীপার সঙ্গে বিয়ে করেন আনুমানিক ‘দুই পৃথিবী’ করার সময়। এরপরেই কোল আলো করে আসেন কোয়েল।
রঞ্জিত মল্লিকের স্ত্রী কিন্তু কম সুন্দরী নন। যদিও তিনি কখনো টেলিভিশনের পর্দায় অভিনয় করেননি কিন্তু সংসার আগলে ছিলেন নিপুণ হস্তে। এমনিতেও রঞ্জিত মল্লিক একজন সজ্জন ব্যক্তিত্ব তাই সাংসারিক অসুখ তাঁদের জীবনে ছিল না বললেই চলে। এখনো এই কিংবদন্তী অভিনেতা স্ত্রী দীপাকে সঙ্গে নিয়ে বহাল তবিয়তে বাস করছেন গল্ফ ক্লাব রোডের আবাসনে।
View this post on Instagram