26 শে জানুয়ারি জি ফাইভে রিলিজ করেছে ঋত্বিক চক্রবর্তী (Ritwick Chakraborty) অভিনীত ‘মুক্তি’। কিন্তু তাঁর সহধর্মিণী অপরাজিতা ঘোষ (Aparajita Ghosh)-কে বহুদিন দেখা যায়নি অভিনয়ে। কারণ আর কিছুই নয়, করোনা অতিমারী। ঋত্বিক ও অপরাজিতার পুত্রসন্তান যথেষ্ট ছোট। একদিকে করোনা, অপরদিকে মাতৃত্ব, সব মিলিয়ে অপরাজিতা একের পর এক ফিল্ম, সিরিয়াল ও ওটিটির কাজ ফিরিয়ে দিয়েছেন।
View this post on Instagram
ঋত্বিক কোভিডের আগে কিছু কাজ করেছিলেন। বাকি কাজ বন্ধ রেখে পরে শেষ করেছেন। কোভিডের জন্য দেড় বছর বাড়িতে ছিলেন তিনিও। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের শেষে কাজে ফিরে ঋত্বিকেরও করোনা হয়েছিল। ফলে আবারও বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। তাই অপরাজিতা আর ঝুঁকি নেননি। ‘গোরা’-র শুটিংয়ের সময় ঋত্বিক আলাদা বাড়িতে থাকছিলেন। কিন্তু তিনি এভাবে বাড়ি ছেড়ে থাকার ফলে তিনজনের মুশকিল হচ্ছিল। এই কারণে এখন তিনি বাড়িতেই একটা ঘরে থেকে কাজ করছেন। বাকি সময়টা মাস্ক পরে থাকছেন।
View this post on Instagram
অপরদিকে অপরাজিতাও কাজে ফিরতে চলেছেন। 180 ডিগ্রির প্রযোজনায় নির্মিত ওয়েব সিরিজ ও মোজো প্রোডাকশন্সের প্রযোজনায় নির্মিত, মণীশ বসু (Manish Basu) পরিচালিত ফিল্ম ‘গু কাকু’-তে অভিনয় করবেন তিনি। অপরাজিতা ফ্লোরে থাকলে ঋত্বিক বাড়িতে ছেলেকে সামলাবেন। ফিল্মে দুজনে একসঙ্গে অভিনয় করছেন। ফলে সেই সময়টা মামাবাড়িতে থাকবে তাঁদের ছেলে। পুরো শুটিং শেষ হলে তবে ছেলেকে আবারও নিজেদের কাছে নিয়ে আসবেন ঋত্বিক ও অপরাজিতা।
View this post on Instagram
180 ডিগ্রি ঋত্বিকের প্রযোজনা সংস্থা। কিন্তু তিনি ও অপরাজিতা কাজ ও সংসার আলাদা করে রাখেন। তবে সংস্থার কর্ণধার ঋত্বিক হলেও অপরাজিতা এই ব্যাপারে বিশেষ কিছু জানেন না। তাঁকে ওয়েব সিরিজে অভিনয় করতে ডেকেছেন ঋত্বিকের সহ-প্রযোজক প্রদীপ ভট্টাচার্য (Pradip Bhattacharya)। চিত্রনাট্য শুনিয়েছেন পরিচালক। ঋত্বিক জানতেন না, তাঁকে অপরাজিতাই বলেছেন, ওই সিরিজে তাঁর অভিনয় করার কথা। তবে এটা তাঁর কমফর্ট জোন বলে মানেন অপরাজিতা। ঋত্বিক ভীষণ ভালো অভিনেতা। তাই তাঁর সাথে কাজ করলেও এমন অনেক সময় হয়েছে, অপরাজিতা ঋত্বিকের বিপরীতে না হয়েও একই ফিল্মে অভিনয় করছেন। তবে তাঁর অপছন্দের কেউ ঋত্বিকের নায়িকা হলেও অপরাজিতা প্রফেশনালিজমে বিশ্বাস করেন।
ইন্ডাস্ট্রিতে আঠারো বছর পার করেও অপরাজিতা বিশ্বাস করেন না প্রতিযোগিতায়। একটি ধারাবাহিকে অভিনয়ের সময় একশো শতাংশ দিতে ফিল্মে অভিনয় করেন না। একটি ধারাবাহিক শেষ হলে দেড়-দুই বছর ধারাবাহিকে অভিনয় না করে ফিল্ম, ওয়েব সিরিজে অভিনয় করার চেষ্টা করেন। কিন্তু যখন কাজ থাকে না, তখন পাহাড়ে ছুটি কাটাতে যেতে ভালোবাসেন অপরাজিতা। নাহলে বাড়িতে সময় দেন। প্রচার ও প্রতিযোগিতা থেকে দূরে থাকতে চাওয়া অপরাজিতার ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলেও পাহাড় ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার ছবি।
View this post on Instagram
একসময় চাকরি করতে করতেই হঠাৎই অভিনয়ে চলে এসেছিলেন। ইটিভির একটি সিরিজে ছোট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ এসেছিল। এরপরেই অতনু ঘোষ (Atanu Ghosh)-এর একটি পাঁচ দিনের গল্প ও ‘ইতি শ্রীকান্ত’। আউটডোরে অপরাজিতার মা তাঁর সঙ্গে যেতেন অফিস কামাই করে। অসুবিধা হতো। কয়েকদিন পরে আবারও এক ধারাবাহিকের জন্য ডাক পেলেন অপরাজিতা। তেল চপচপে চুল নিয়ে, মেকআপ না করে, সাধারণ জিনস-কুর্তি পরে চলে গিয়েছিলেন পরিচালক ও চিত্রনাট্যকারের সঙ্গে দেখা করতে। স্বাভাবিক ভাবেই পরিচালক অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় (Anindya Banerjee)-র কাছে রিজেকশন। তবে পর্দায় মেকআপে দেখার পর তিনিই কিন্তু ‘একদিন প্রতিদিন’-এর মোহরের চরিত্রে নির্বাচন করলেন অপরাজিতাকে। তখনও অপরাজিতা বুঝতে পারছিলেন না, অভিনয় তাঁর পেশাদার হয়ে যাচ্ছে। মনে হত, এরপর আবারও তাঁকে চাকরি খুঁজতে হবে। কিন্তু একসময় অভিনয়কেই ভালোবেসে ফেললেন তিনি।
‘এখানে আকাশ নীল’-এ অভিনয়ের সময় ঋষি কৌশিক (Rishi Koushik)-এর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গুজব রটেছিল। এমনকি শোনা গিয়েছিল, তাঁদের নাকি দুটি মেয়ে রয়েছে, তারা দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলে পড়ে। ঋষি ও অপরাজিতা রীতিমত মজা করতেন তা নিয়ে। প্রকৃতপক্ষে, ওই স্কুলে তাঁদের কিছুদিন শুটিংয়ের ফলে দর্শকদের একাংশ এই ধরনের গল্প তৈরি করেছিলেন। তবে ঋষি ও তাঁর স্ত্রী দেবযানী (Debjani)-র সঙ্গে তাঁদের বন্ধুত্ব রয়েছে অপরাজিতার। কিন্তু ঋত্বিক ছিলেন তাঁর খুব ভালো বন্ধু। সেই বন্ধুত্ব একসময় প্রেমে পরিণত হয়। 2011 সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ে সংসার করলেও ঋত্বিক ও অপরাজিতা এখনও আগের মতোই বেস্ট ফ্রেন্ড।
View this post on Instagram