গ্যাস অম্বলের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তির ঘরোয়া টিপস
বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেক সময় বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়না তখন রাস্তার দু’পাশের ফুটপাতের খাবার কিংবা অনলাইনে খাবার অর্ডার দেওয়া ছাড়া আর কোন পথই খোলা থাকেনা। আর সমস্যা হয় সেইখান থেকেই শুরু হয় গ্যাস অম্বল এর। দিনের-পর-দিন গ্যাস অম্বল হতে হতে শরীরের ভিতর নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। কিন্তু কয়েকটি ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলেই আপনি গ্যাস অম্বল এর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
যদি বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে বাইরের খাবার অবশ্যই খাবেন তবে সব সময় স্পাইসি ফুড নয়। রাস্তাঘাটে পথ চলতে অনেক রকমের খাবার দেখা যায়। তারমধ্যে ভালো খাবারও থাকে যেমন ধরুন কোন জাঙ্ক ফুডের বদলে রুটি তরকারি খেতে পারেন, ঝাল মুড়ি মাখা খেতে পারেন, রাস্তার দুধারে প্রচুর ফলের দোকান থাকে সেখান থেকে ফল কিনে যেকোনো সিজনাল ফ্রুট অন্তত দুটো খেতে পারেন। রাস্তায় বানানো তরকারির মধ্যেও অনেক মসলা থাকে সেগুলো যদি না খেতে চান তাহলে রাস্তা থেকে কলা কিনে নিয়ে রুটির সঙ্গে অনায়াসেই খেতে পারেন। ঘন ঘন চিনি মিশ্রিত দুধ চা না খেয়ে মাঝেমধ্যে লিকার চা খান। বানানো খাবার সাথে না থাকলেও সঙ্গে রাখুন ড্রাই ফ্রুট। খুব খিদে পেলে মাঝে মধ্যে কয়েকটা কাজু, কিসমিস, আমন্ড বা সামান্য চিনে বাদাম খেতে পারেন।
রাতে খাবার পর পরই একেবারে শুয়ে পড়বেন না। এতে হজম হতে খুব সমস্যা হয়। অফিস থেকে ফিরে এসে টুকিটাকি খাবার না খেয়ে প্রয়োজন হলে একেবারে ডিনার করে নিন। প্রয়োজনীয় ফোনকল বিছানার মধ্যে বসে না করে ছাদে, বারান্দায়, ব্যালকনিতে বাবা আপনার বাড়ির সামনের রাস্তায় হেঁটে হেঁটে কথা বলতে পারেন। তাহলে হাঁটাও হবে খাবার হজম হবে।
কথায় কথায় টপাটপ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মুখশুদ্ধি হিসাবে খেতে পারেন মৌরি কিংবা জোয়ান। অথবা জিরে। জিরে হজমে সাহায্য করে। প্রয়োজন হলে সমপরিমাণ জিরে, মৌরি এবং জোয়ান হাল্কা ভাবে ভিজে নিয়ে মিক্সিতে গুঁড়ো করে নিয়ে রাতে শুতে যাওয়ার সময় উষ্ণ গরম জলের মধ্যে এক চামচ এই মিশ্রণ এবং এক চামচ সৈন্ধব লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে খেয়ে নিন। এটি খেলে গ্যাস অম্বল এর সমস্যা চিরতরে বিদায় নেবে।
অতিরিক্ত চাপা অম্বল হলে গরম জল পান করতে পারেন। গরম জল অ্যান্টাসিড এর কাজ করে। শুকনো মুড়ি চিবিয়ে চিবিয়ে খান। এতেও অনেকটা অম্বল চলে যাবে।
প্রতিদিনের ডায়েট থেকে চিনি এবং নুন একেবারে বাদ দিয়ে দিন। চিনির বদলে মধু, গুড়, মিছরি ইত্যাদি খেতে পারেন। আর নুন এর পরিবর্তে সৈন্ধব লবণ অথবা বিট নুন ব্যবহার করুন।
চা-কফি একেবারে ছেড়ে দিতে পারলে ভালো হয় কিন্তু যদি তা না পারেন তাহলে গরম জলের মধ্যে আদা তুলসীপাতা, গোলমরিচ, লবঙ্গ, দারচিনি এই সবগুলোই ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে মধু এবং মিছরি সহযোগে পান করুন। খেতেও ভালো লাগবে এবং এটি আপনার শরীরের জন্য ভীষণ ভালো উপাদান।
নিয়মিত সকালে উঠে অন্তত পনের মিনিট প্রাণায়াম করুন। গ্যাস অম্বল দূর করার জন্য খুব ভালো একটি প্রাণায়াম হলো কপালভাতি প্রাণায়াম। এটি করলে শরীর সুস্থ থাকবে।
প্রতিদিন সকালে উঠে কাঁচা হলুদ, গুড়ের সঙ্গে চিবিয়ে খেতে পারে। কাঁচা হলুদ শরীরের জন্য ভীষণ ভালো বিশেষত লিভারকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে কাঁচা হলুদ।
সর্বোপরি দিনে ১০ গ্লাস জল পান করুন। শীতকালে আমরা অনেকেই জল কম খেয়ে থাকি। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঠান্ডা জল খেতে যদি সমস্যা হয় তাহলে বারেবারে গরম জল পান করুন।