পুজোয় রসনাতৃপ্তিতে নো চিন্তা, গঙ্গায় ইলিশের ঝাঁকের আশায় মৎস্যজীবীরা, দাম কি কমবে?
পুজোয় বাঙালির রসনাতৃপ্তিতে ইলিশের (Hilsa) গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আপাতত পদ্মার ইলিশ পাওয়া সম্ভব নয়। সে দেশের বাজারেই ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। উপরন্তু আগামী ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে ওপার বাংলায়। তাই সরকারি ভাবে ভারতেও ইলিশ ঢুকবে না বাংলাদেশ থেকে। তবুও পুজোর কটা দিন বাঙালির পাতে রূপোলি শষ্য পড়ার একটা সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। এ রাজ্যের মৎস্যজীবীদের আশা, পুজোর আগেই গঙ্গায় মিলবে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ।
এ বছর প্রচুর পরিমাণে পদ্মার ইলিশ পাঠিয়ে এপার বাংলার মানুষকে ‘খুশ’ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু আপাতত ইলিশের রপ্তানি বন্ধ রয়েছে সে দেশ থেকে। এই সময়টা বাংলাদেশে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কারণ এটা ইলিশের প্রজননের সময়। সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ এ সময় গঙ্গা এবং পদ্মার মিষ্টি জলে ডিম পাড়তে আসে। তাই আগামী ২২ দিন ইলিশ ধরা, মজুত, কেনা বেচায় কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশের ৩৮ টি জেলায়। অন্যথায় মাছ ধরার সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত, দশ হাজার টাকা জরিমানা থেকে শুরু করে ২ বছরের জেল পর্যন্ত সাজা ঘোষণা করা রয়েছে।
বিগত কয়েক বছর ধরে এই নিয়ম বলবৎ হওয়ায় ইলিশের উৎপাদন লক্ষণীয় হারে বেড়েছে বাংলাদেশে। এপার বাংলাতেও অবশ্য ইলিশের ডিম পাড়ার এই সময়টায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ। তবে বাংলাদেশের মতো নিয়ম থাকলেও তার প্রয়োগ বিশেষ নেই। উল্লেখ্য, এই সময়টায় পদ্মা বেয়ে প্রচুর ইলিশ আসে ফরাক্কা এবং নিমতিতার গঙ্গায়। পুজোর আগে তাই পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার তৎপরতা বেড়ে যায়।
যদিও ডিম পাড়ার সময়টায় ইলিশ সংরক্ষণ করতে নদী অঞ্চলের পাঁচটি এলাকায় জুন থেকে অগাস্ট মাস এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। এই এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে ফরাক্কা ব্যারেজ সংলগ্ন একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক একটি ইলিশ প্রায় ২২ লক্ষ ডিম পাড়ে। যে ডিমগুলি নিষিক্ত হয় তার মধ্যে থেকে অন্তত ১০ শতাংশ পোনাও যদি বাঁচে তাহলে এক বছরে প্রায় ৫৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইলিশ পাওয়া যাবে। অন্যদিকে মৎস্যজীবীদের দাবি, বাংলাদেশের পদ্মা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ এই সময় গঙ্গায় ঢোকে। তাই দুর্গাপুজোর সময়ে ভালো ইলিশ পাওয়ার আশা রয়েছে মৎস্যজীবীদের।