‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা!’ বাঙালির মাতৃভাষাটা সত্যিই বেশ গর্বের। প্রতিবারের মতো এইবারও দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠিত হলো। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রতুল মুখোপাধ্যায়, শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের মতো একাধিক বিশিষ্টজন। ভাষা দিবস পালনের সাথে এদিন শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠানও পালিত হলো।
সস্প্রতি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বাঙালির গর্ব, বাংলার গায়ক বাপ্পি লাহিড়ী। এদিন মঞ্চে তাঁকেই স্মরণ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “বাপ্পি লাহিড়ি তাঁর অতুলনীয় সুর ও তাল দিয়ে ছাত্রদলের মন ছুঁয়েছেন। ওঁর গানগুলি আজকাল যুগেও বেশ জনপ্রিয়। মঙ্গল দ্বীপ জ্বেলের মতো অতো সুন্দর গান আর ফিরবে না।” তিনি জানালেন, “আমার সাথে বাপ্পিদার দেখা হলেই তাঁকে দু-একটা গান লিখে দিতেও বলেছেন। গান লিখে দিয়েছিলাম।” মমতার লেখায় বাপ্পি দার নাকি গলা দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। কোনও কারণে গেয়ে ওঠা হয়নি।
এদিন সোমবার মুখ্যমন্ত্রী একটু আবেগঘন হয়ে পড়েছিলেন বাংলা ভাষার প্রতি। মাতৃভাষা দিবসে বেশ অন্যরকম একটি উত্তরীয় পড়েছিলেন মমতা। সমস্ত রকমের ভাষা লেখা ছিল তাতে। এই প্রসঙ্গেও তিনি বললেন, “সব ভাষাকেই ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি আমি। সেই জন্যই এই উত্তরীয় ধারণ করলাম। তবে নিজের মাতৃভাষাকে বেশি ভালোবাসতে হবে। তবে আজকালকার ছেলেমেয়েগুলো বাংলাই শিখতে চায় না। অবশ্য ওদের আর কি দোষ। মা-বাবারাই তো চান না। তাই তাঁদের উদ্যোগ নেওয়াটা বেশ জরুরি।”
নিজেদের গর্বের ভাষা নিয়ে মুখ খুললেন মঞ্চে উপস্থিত প্রতুল মুখোপাধ্যায় ও শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যরাও। বেশ আক্ষেপের সুর ছিল ওঁদের কন্ঠে, “কি বলবো বাংলা ভাষা আজকাল বাঙালি ছাত্র সমাজ বলতে পারে না ঠিকই। সাথে লিখতেও পারে না। বাংলা না বলাটাই এখন গর্বের বিষয়। মাঝে মাঝেই শোনা যায়, বাংলাটা আমার ঠিক পোষায় না। কি অদ্ভুত তাই না!” বিদ্যজনের ভাষায়, আজকাল তো বাবা বলতে লজ্জা। ড্যাড বা পাপা ডাকই তো আসল। মা-বাবাকে তো মা বা বাবা বললে কতো মিষ্টি শোনায়। কিন্তু সে যুগ আর কোথায়!