whatsapp channel

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: এক হার না মানা লড়াকু মেয়ের সংগ্রাম কাহিনী

সেবার গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে উড়ছে লাল আবীর। এ যেন জয়ের আবীর নয়, কোনো নারীকে পরাজিত করার আনন্দ। মেয়েটি যে লড়াকু। মার খেয়েও পিছু হটে না। প্রভাবশালী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পার্টি ছেড়ে এক রাতের সিদ্ধান্তে বেরিয়ে এসেছিল সে। পাশে ছিলেন মাত্র কয়েকজন সাংসদ। মাটির বুকে অযত্নে বেড়ে ওঠা জোড়া ঘাসফুলকে নতুন দলের প্রতীক করে এগিয়ে যেতে চাইল সে।

Avatar

HoopHaap Digital Media

সেবার গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে উড়ছে লাল আবীর। এ যেন জয়ের আবীর নয়, কোনো নারীকে পরাজিত করার আনন্দ। মেয়েটি যে লড়াকু। মার খেয়েও পিছু হটে না। প্রভাবশালী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পার্টি ছেড়ে এক রাতের সিদ্ধান্তে বেরিয়ে এসেছিল সে। পাশে ছিলেন মাত্র কয়েকজন সাংসদ। মাটির বুকে অযত্নে বেড়ে ওঠা জোড়া ঘাসফুলকে নতুন দলের প্রতীক করে এগিয়ে যেতে চাইল সে। হ্যাঁ, সে, তখন তাকে এই নামেই অভিহিত করা হত। ছাত্রজীবনে দেওয়াল লিখনের মাধ্যমে রাজনীতিতে উঠে আসা মেয়ের কোনো ভবিষ্যত দেখতে পায়নি কেউ। তার সাদা শাড়ি, হাওয়াই চটি, টালির বাড়ি নিয়ে মজা করত সবাই। কিন্তু মেয়ে অনড়। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তার আরাধ্যা দেবী মা কালীর মতো।

চারিদিকে যখন বাতাসে লাল আবীর, মেয়েটির ঘরের দরজা বন্ধ। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে মাত্র একটি সিট পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সকলের সামনে কাঁদতে পারল না সেই মেয়ে। তার বন্ধ ঘরের সামনে তখন পরাজিতর ভিড়। কিন্তু তবু দিদিকে ছেড়ে যেতে রাজি নন কেউ। নিভৃতে কাঁদার অবসর সেই মেয়েকে করে তুলেছিল পরিপূর্ণ নারী। দরজা খুলেছিল অনেক পরে। তৈরি হয়েছিল নতুন রাজনৈতিক কৌশল। সাদা শাড়ি, হাওয়াই চটি পরে একের পর এক জ্বালাময়ী ভাষণ। টিভির সামনে সেই নারীকে দেখে মুচকি হাসে পুরুষতন্ত্র। কে যেন রটিয়ে দিল, বিয়ে হয়েছিল তাঁর। উদ্ধত স্বভাবের জন্য ঘর করতে পারেননি তিনি। বামফ্রন্টের প্রশ্ন, কপালে সিঁদুর জোটেনি কেন!

আগেই ব্রিগেডে বেজে গিয়েছিল বামফ্রন্টের মৃত্যুঘন্টা। এসে গেল 2011 সালের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সিঙ্গুর আন্দোলন, নন্দীগ্রামকে সমর্থনের পর্ব ঘটে গেছে। অধিকাংশ মানুষ ভাবছেন আবারও বাতাসে উড়বে লাল আবীর। কিন্তু তাঁরাও বোধহয় পরিবর্তন চেয়েছিলেন। বিধানসভা নির্বাচন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন। বামফ্রন্টের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি। ফলাফল ঘোষণার দিন সকাল থেকে টিভির সামনে হাজার হাজার উৎসুক চোখ। হরিশ মুখার্জী রোডের বাড়ির সামনে মহিলা তৃণমূল কর্মীদের ভিড়।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Anustup Sinha (@anustupsinha)

হৃদয়ের গতিবেগ বাড়িয়ে অবশেষে ঘোষণা হল ‘বাংলা মমতার’। শঙ্খধবনি-র মধ্যেই হরিশ মুখার্জী রোডের বাড়িতে যেন অকালবোধন। নির্দিষ্ট দিনে বাংলার প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণ, সেই একই সাদা শাড়ি ও হাওয়াই চটি। চোখে উঠেছে অভিজ্ঞতার চশমা, আজ আর সে নয়, আজ তিনি। তিনি, বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এক লহমায় ভেঙে দিয়েছেন চৌত্রিশ বছরের বাম শাসন। মুচকি হাসা পুরুষদের বার্তা দিয়েছেন ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। অগ্নিকন্যার জন্মদিনে তাঁর প্রতি ‘হুপহাপ’ (HOOPHAAP)-এর পক্ষ থেকে রইল সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা।

whatsapp logo
Avatar
HoopHaap Digital Media