চা না কফি, আপনার শরীরের জন্য কোনটির প্রয়োজন বেশি
‘এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই’, কিংবা শীতকালে বারান্দায় বসে বসে মনের মানুষের সঙ্গে কফিতে চুমুক দেওয়া অথবা বন্ধুদের সঙ্গে কোন কফি শপে গিয়ে পকোড়া সঙ্গে কফি খাওয়া। সব কিছুই মানুষের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।
সকালবেলা উঠে এক কাপ চা না খেলে সকালটা যেন হতে চায় না কিংবা অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে মাটির ভাঁড়ে করে গরম দুধের চা। আর শীতকাল পড়লে কফিতে চুমুক দেওয়া। এই সবকিছুই শরীরের জন্য কতটা ভালো বা আপনি কোন সময়ে চা খাবেন কোন সময়টা কফি খাবেন আপনি কি এই দুটোর কোনটাই খাবেন না! এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন এই লেখাতে।
আয়ুর্বেদিক ভাষাতে বলতে গেলে আপনার জন্য চা বা কফি কোনটাই ভালো নয়। আপনি যদি সব দিক থেকে সুস্থ হয়ে থাকুন চা বা কফির মধ্যে থাকা পদার্থটি আপনাকে নেশা করাতে সাহায্য করে। কোন কিছুর নেশা হওয়া কখনোই ভালো লক্ষণ নয়। এই কথা শুনে চা প্রেমীরা হয়তো একটুখানি মন খারাপ করবেন, কিন্তু বিশ্বাস করুন যদি ধীরে ধীরে আপনার জীবন থেকে চা বা কফিকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে দেন তাহলে অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচবেন। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে শীতকালে গরম গরম কি খাওয়া যেতে পারে। শীতকালে নিজের দেহের উত্তাপ কে বাড়ানোর জন্য চা-কফির ওপর নির্ভরশীল হবেন না এর জায়গায় নানা রকমের গরম পানীয় খেতে পারেন। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস গরম জল দিয়ে দিন শুরু করুন।
অনেকেই আছেন যারা ডায়েট করছেন, তারা এই গরম জলের মধ্যে এক চামচ গোটা জিরে দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে জিরে চা বানাতে পারেন। আবার মাঝেমধ্যে এই গরম জলের মধ্যে এক চামচ দিয়ে জোয়ান ফুটিয়ে জোয়ানের চাও খেতে পারেন। এতে শরীর অনেক ভালো থাকবে এবং রোগা হতে সাহায্য করবে। সারা দিনে যতবার চা খেতে ইচ্ছা করবে ততবারই পারলে গরম জল খান।
শীতকালের সকাল বেলা অথবা সন্ধ্যা বেলা কাজ থেকে ফিরে এসে চা বা কফির জায়গায় এক কাপ গরম জলের মধ্যে কয়েক টুকরো আদা, কয়েকটা তুলসী পাতা, কয়েকটা লবঙ্গ, কয়েকটা গোলমরিচ ভালো করে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে মধু দিয়ে খেতে পারেন। এটি অনেক বেশি সুস্বাদু এবং শরীরের জন্য ভালো।
চা, কফির জায়গা অনেকখানি নিতে পারে যদি এক কাপ সয়াবিনের দুধের সঙ্গে কয়েকটা গাজর গ্রেট করে ফুটিয়ে ছেঁকে খেতে পারেন। রাতে ঘুমনোর আগে এটি খেয়ে দেখতে পারেন।
তবে যারা অতিরিক্ত চা-কফি পান করেন তাদের পক্ষে একদিনের সমস্ত কিছু অভ্যাস ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। চেষ্টা করুন নিশ্চয়ই পারবেন। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে বলা আছে, একমাত্র আপনার যখন সর্দি কাশি হবে, মাথা ব্যথা করবে সেই মুহূর্তে আপনি চা, কফি খেতে পারেন।